গরুর দুধ কি শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত ?
____________________________________
গরুর দুধের উপকারিতা আমাদের সবার কাছেই স্বীকৃত। আমাদের ধারণা পুষ্টি
জোগানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে গরুর দুধ।কিন্তু এই ধারণা ভুল। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।
সন্দেহ নেই গরুর দুধে অধিক পরিমানে প্রোটিন ছাড়াও ক্যালসিয়াম ফসফরাসের মতো খনিজ
আছে পরিপূর্ণরূপে। তবু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর জন্য গরুর দুধ খাওয়ানো পরিহার করাই ভালো। বিশেষ করে এক বছরেরে কম বয়সী মানব শিশুদের গরুর
দুধ খাওয়ালে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কারণ হল গরুর দুধ শিশুরা সহজে
হজম করতে পারে না, যার ফলে দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্যে। গরুর দুধে রয়েছে ক্যাসিনের আধিক্য এবং বিটা ল্যাকটোগ্লোবিনের উপস্থিতি।
ফলে গরুর দুধ পানরত শিশু অ্যাকজিমা, আন্ত্রিক প্রদাহ ও মলে রক্তক্ষরণের সমস্যায় ভোগে। গরুর দুধে আমিষ বা প্রোটিনের পরিমাণ
খুব বেশি থাকে বলে এক বছরের কম বয়সী শিশুকে
গরুর দুধ খাওয়ানো হলে এই অতিরিক্ত মাত্রার আমিষ ও খনিজ পদার্থ নিষ্কাশনে কিডনিকে অনেক বিপত্তির সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে অল্পবয়সী শিশুর
শরীরে শোষিত হওয়ার মতো খুব অল্প পরিমাণ আয়রন গরুর দুধে । ফলে
এ বয়সে গরুর দুধ পানরত শিশু রক্তস্বল্পতার শিকার হয়। কমবয়সী শিশুর
জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘ই’ ও ভিটামিন ‘সি’ এর মাত্রা গরুর দুধে কম থাকে। তাই গরুর দুধ নির্ভরশীল শিশুর ভিটামিনের
স্বল্পতাজনিত অসুখঃ রাতকানা, স্কার্ভি প্রভৃতি হতে পারে। গরুর
দুধে ইমিউনোগ্লোবিউলিন, লিউকোমাইট, ম্যাক্রোফেজ, নিউট্রোফিল এর মত
উপাদান নাই যা, শিশুর শরীরে রোগপ্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে, ও হাড়
মজবুত করতে সাহায্য করে। গরুর দুধে প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৮ গ্রাম চর্বি আছে,
তবে শিশুর মস্তিষ্কের বৃদ্ধি বিকাশের জন্য একান্ত জরুরি ফ্যাট এসিড এতে নেই। তাই শিশুর প্রথম বছরে গরুর দুধ মানবশিশুর জন্য আদর্শ খাদ্য নয়। স্মরনীয় যে বাজারের কৌটা জাত সকল দুধই গরুর দুধ।
প্রথম বছর মানব শিশু আদর্শ খাবার হল মায়ের দুধ। এবং ছয় মাস বয়স থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে
স্বাভাবিক খাবার দেয়া যাবে। প্রথমে নরম খাবার এবং আস্তে আস্তে শক্ত খাবার।
Comments
Post a Comment