♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬♬
ডাঃ আশীষ কুমার ঘোষ।
শিশু ও শিশু রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ।
সহকারী অধ্যাপক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রেশনেঃ এনআইসিআর -এইচ।
প্রতিবন্ধী শিশুদের রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া খুবই সাধারণ ঘটনা। যদিও এই রক্তশূন্যতা তেমন চোখে পরে না ডেভলপমেন্ট স্পেশালিস্ট দের। শিশুদের মা বাবাও এই রক্তস্বল্পতা চোখে পরে না । অথচ এই এনিমিয়া কে চিকিৎসা বা প্রতিরোধ করলে ঐ বিশেষ শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি দ্রুত ও বেশী হয়।
এক গবেষণায় দেখা গেছে বিশেষ শিশুদের এনিমিয়ার হার শতকরা ৬.৬ ভাগ। গ্লোবাল ডিলে বা অটিজমের শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার একটু কম। বস্তুত এই হার কেও উপেক্ষা করার মত নয়! বিশেষ করে সেরিব্রাল পালসি শিশুদের ক্ষেত্রে রক্তশূন্যতা অনেক বেশী। গ্রীসের এক গবেষণা বলছে সেরিব্রাল পালসি তে রক্তস্বল্পতা ৩৩ -৩৮ %। এই সমস্ত শিশুদের প্রায় সবাই আয়রন অভাব জনিত রক্তশূণ্যতায় ভোগে। এসমস্ত শিশুদের কারোই ভিটামিন -বি বা ফলিক এসিডের অভাব নেই। সেরিব্রাল পালসির এই শিশুদের কারো খাদ্য নালীর রক্তক্ষরণ নেই বা কৃমি সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এদের অনেকেই তরল খাবার খেয়ে থাকে।
একমুখী গবেষণায় দেখা গেছে এই সকল অবিকশিত শিশুদের আয়রন স্বল্পতার কারণ তিনটা। ১। খাদ্যে আয়রণের অভাব ( যেমন খাদ্যতালিকায় মাংস, মাছ, ডিম কম থাকা)। ২। খাদ্য চোষা, খাবার চাবানো, খাবার গেলার অসমর্থ এবং ৩। দুর্বল ও অপরিপক্ক খাদ্য গ্রহণ।
বিশেষ শিশুদের এনিমিয়ার অসংখ্য কারণ। এদের চোষার সমস্যা, খাদ্য চর্বন না করা , খাদ্য গলন্ধকরনের সমস্যা থাকে। কম খাদ্য খাওয়া, ডিম, মাছ মাংস কম খাওয়া, তরল খাবার খাওয়া বিশেষভাবে দ্বায়ী। খিচুনির ঔষধ, ক্রনিক ইনফেকশন, কৃমি সংক্রমণ রক্তস্বল্পতা তৈরিতে সহযোগিতা করে। এ জাতীয় শিশুদের আয়রন হজমের সমস্যাও থাকে।
আমাদের দেশে আয়রন ঘটিত রক্তস্বল্পতা আরো প্রকট। বাংলাদেশের প্রায় ৫৩ ভাগ শিশু কোন না কোন রক্তস্বল্পতায় ভোগে। তদুপরি আমাদের দেশের বিশেষ শিশুদের খাদ্য, খাদ্যমূল্য, সেই শিশুদের রক্তস্বল্পতা, খাবারের রুচি প্রভৃতি নিয়ে চিন্তা করা বা কাউন্সেলিং করার কোন ব্যাবস্থা নেই।
শিশু রক্তরোগ বিশেষজ্ঞরা এদের আয়রন ও ভিটামিন দিয়ে চিকিৎসা করেন। এই চিকিৎসক অনেক বিশেষ শিশুকে ডেভলাপমেন্টাল থেরাপির সাথে এনিমিয়ার চিকিৎসা করে প্রভূত ভাল ফল পেয়েছেন। লক্ষণীয় এদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এন্ডোসকপি করা দরকার হয়নি।
Comments
Post a Comment