Skip to main content

ইন্সট্যান্ট নুডলস থেকে ক্যানসার

ইন্সট্যান্ট নুডলস থেকে ক্যানসার
ডাঃ শারমিন আফরোজ
বার্লিন, জার্মানি।

নুডলস কে না পছন্দ করে! রান্না করতে হয় না বলে ইন্সট্যান্ট নুডলস সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়৷ ম্যাগি নুডলস তো আজ ঘরে ঘরে! কিন্তু ইন্সট্যান্ট নুডলস মানেই যে রোগের ডিপো, তা কি জানেন?

হজম ক্ষমতা কমায়

ইন্সট্যান্ট নুডলস খাওয়ার পর স্বাস্থ্যকর খাবার, যেমন শাক-সবজি বা ফলমূল খেলেও প্রত্যাশিত লাভ হয় না৷ কারণ শাক-সবজি বা ফলের পুষ্টিকর উপাদানগুলোকে শরীর আর তখন গ্রহণ করতে পারে না৷ ইন্সট্যান্ট নুডলস খাওয়ার কারণেই এমন হয়৷ ইন্সট্যান্ট নুডলস খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত শরীরের হজম প্রক্রিয়া ঠিকভাবে কাজই করে না৷

ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে

ইন্সট্যান্ট নুডলসে এমন কিছু উপাদান থাকে, যেগুলো ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়৷ বিশেষ করে নুডলস অনেকদিন ভালো রাখার জন্য যে ‘প্রিজারভেটিভ’ মেশানো হয়, সেগুলোর কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে৷ কাপ-নুডলসের কাপ তৈরি করা হয় ‘পলিস্টাইরিন’ দিয়ে৷ সেই পলিস্টাইরিনেও থাকে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ানোর মতো উপাদান৷ কাপে গরম পানি ঢাললেই সেই উপাদানগুলো গলে নুডলসে মিশে যায়৷

কিডনির সমস্যা

ইন্সট্যান্ট নুডলসে প্রচুর ‘সোডিয়াম’ থাকে৷ কমপক্ষে ৮০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে নুডলসের ছোট একটা প্যাকেটে৷ অথচ একটা মানুষ সারাদিনে মাত্র ২৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম নিতে পারে৷ ফলে প্রতিদিন একটা করে নুডলস খেলেও কিডনিতে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷

অ্যালার্জি, মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা...

প্রচুর এমএসজি, অর্থাৎ ‘মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট’-ও থাকে ইন্সট্যান্ট নুডলসে৷ এই এমএসজি, যা সাধারণভাবে ‘চাইনিজ লবণ’ বলে পরিচিত, অনেকের একদমই সহ্য হয় না৷ ফলে ইন্সট্যান্ট নুডলস খেলেই শুরু হয় মাথাব্যথা, বুক ব্যথাসহ নানা ধরণের সমস্যা৷ তাই দীর্ঘদিন ইন্সট্যান্ট নুডলস খাওয়ার ফলে এক সময় ক্যানসারও হতে পারে৷

ক্যানসারের আরো কারণ....

নুডলস যাতে শুকিয়ে শক্ত হয়ে না যায়, সেজন্য ‘প্রোপিলিন গ্লাইকল-’এর মতো ‘অ্যান্টিফ্রিজ’ উপাদানও মেশানো হয় ইন্সট্যান্ট নুডলসে৷ এ সব উপাদান অনেক ধরণের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়৷ এ সবের কারণে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং কোনো এক সময় ক্যানসারও হতে পারে৷

ভারতীয় ম্যাগী নুডলসের খবর

দুই ববছর আগে ভারতের উত্তরপ্রদেশে এই নুডুলসের কিছু নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এতে গ্রহণযোগ্য মাত্রার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে সিসা ও মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই তথ্য সামনে আসার পর থেকেই ভারতজুড়ে 'ম্যাগি' নিষিদ্ধ করার পক্ষে জোরদার সওয়াল করছেন বিশেযজ্ঞরা।
'ম্যাগি'-র লাইসেন্স বাতিল করার দাবি জানিয়ে, দিল্লির ফুড সেফটি এন্ড স্ট্যান্ডার্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই) কে একটি চিঠি লিখেছিল লখনউয়ের ফুড সেফটি এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফএসডিএ)। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে 'ম্যাগি'-র নমুনা পরীক্ষা করে তার খাদ্যগুণ বিচারেরও আর্জি জানিয়েছিল তারা। এফএসডিএর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বিজয় বাহাদুর যাদব জানিয়েছেন, 'আমরা কলকাতার ল্যাবরেটরিতে 'ম্যাগি'-র নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছি। দেখা গেছে, 'ম্যাগি'-তে অতিরিক্ত পরিমাণে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট ও সীসা রয়েছে'। যেখানে খাদ্যবস্তুতে সীসার পরিমাণ ০.০১ পার্টস পার মিলিয়নের বেশি রাখার অনুমতি নেই, সেখানে ম্যাগিতে সীসা পাওয়া গেছে ১৭ পার্টস পার মিলিয়ন।
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ ম্যাগির প্রস্তুতকারক কোম্পানি নেস্ট-লে। কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, 'আমরা ম্যাগিতে এমএসজি মেশাই না। যদি কোনও নমুনায় তা পাওয়া যায়, তবে তা অন্য কোনওভাবে তাতে এসে পড়েছে। আর সীসা কতটা মেশানো হচ্ছে, তার ওপর সবসময় নজরদারি রাখা হয়, যাতে তার পরিমাণ অতিরিক্ত না হয়ে যায়।'
বিভিন্ন প্যাকেজড ফুডে ফ্লেভার আনার জন্য ব্যবহার করা হয় মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। যা শরীরের পক্ষে, বিশেষত শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে মত বিশেযজ্ঞদের।

Comments

Popular posts from this blog

সিজারিয়ান সেকশন

বন্দ হোক অপ্র‌য়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশনের । সন্তান জন্মদান একটি প্রকৃতি নির্ধারিত স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। মেয়েরা কম বেশী ২৭০ দিন গর্ভধারণের পর যোনীপথে সন্তান প্রসব করেন - এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তাই যোনীপথে সন্তান বেরিয়ে আসাকে নরমাল বা স্বাভাবিক ডেলিভারী বলা হয়। বিজ্ঞান বলছে শুধুমাত্র ১০-১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ডেলিভারী যোনীপথে হবে না, সেক্ষেত্রে তলপেট দিয়ে জরায়ু কেটে নবজাতককে বের করতে হবে। এই অপারেশনটির নামই হচ্ছে সিজারিয়ান সেকশন বা সি-সেকশন। এখানে কোন দ্বিমত নেই যে, সিজারিয়ান সেকশন একটি জীবন রক্ষাকারী পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি কোথায়-কখন প্রয়োগ করতে হবে অথবা হবে না, চিকিৎসা বিজ্ঞানে তা পরিষ্কারভাবে বলা আছে । যেখানে প্রয়োজন সেখানে সময়মতো সিজারিয়ান করতেই হবে, নইলে মা-নবজাতকের একজন বা উভয়ের মৃত্যু হতে পারে, অথবা মারাত্মক শারীরীক জটিলতা দেখা দিতে পারে। সাধারণভাবে একটি দেশের সিজারিয়ানের হার নির্দেশ করে, সে দেশের প্রসূতিদের জন্য জীবনরক্ষাকারী ‘জরুরী প্রসূতি সেবা’ কতখানি সহজলভ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একটি দেশের সি-সেকশনের হার ১০-১৫ শতাংশের আশেপাশে থাকা উচিৎ। এই আলোচনার সূত্রপাত হচ্ছে এক...

Best Child Hematology Specialist of Dhaka. Bangladesh

Dr.Ashis Kumar Ghosh                          MBBS, DCH.MD Assistant Professor Paediatric Hematology and Oncology National Institute of Cancer Research and Hospital Mohakali, Dhaka, Bangladesh Email: ashiskumarghosh@Gmail.com Telephone number : 8801712685509 Health and Hope Hospital   152/2/G, Green Road,Panthapath, Dhaka-1205, Bangladesh  For Appointment: 01611131253, 01678131252 Sunday and Wednesday 2-5 pm. (Room no-311) Web. https://child-cancer-care-bangladesh5.cms.webnode.com পদ্মা প্যাথ ল্যাব ৬ দারুসসালাম সড়ক মিরপুর -১

German cancer registry

https://onlinelibrary.wiley.com/doi/epdf/10.1002/pbc.24997 Rare Malignant Pediatric Tumors Registered in the German Childhood Cancer Registry 2001–2010 Background. The German Childhood Cancer Registry (GCCR) annually registers approximately 2,000 children diagnosed with a malignant disease (completeness of registration >95%). While most pediatric cancer patients are diagnosed and treated according to standardized cooperative protocols of the German Society for Pediatric Oncology and Hematology (GPOH), patients with rare tumors are at risk of not being integrated in the network including trialsandreferencecenters.Procedure.Aretrospectiveanalysisofall rare extracranial solid tumors reported to the GCCR 2001–2010(age 95%). While most pediatric cancer patients are diagnosed and treated according to standardized cooperative protocols of the German Society for Pediatric Oncology and Hematology (GPOH), patients with rare tumors are at risk of not being integrated in the network includ...