Skip to main content

শিশুদের স্থুলতা বাড়িয়েছে।

"
বিশ্বে স্থূল শিশুর সংখ্যা বাড়বে

ডাঃ রুবি পরশিয়া
ঢাকা মেডিকেল কলেজ

ধনী দেশগুলোতে শিশুদের স্থূলতার হার সবচেয়ে বেশি, কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও শিশুরা স্থূল হয়ে যাচ্ছে৷ মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে৷

তবে বিশ্বে মোটা বা স্থূল শিশুদের তুলনায় পুষ্টিহীনতায় ভুগছে বা স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম এমন শিশুর সংখ্যা বেশি৷  বর্তমানে বিশ্বে সাড়ে ৭ কোটি মেয়ে এবং ১১ কোটি ৭০ লাখ ছেলের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম৷ কিন্তু বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে ২০২২ সাল নাগাদ স্থূল শিশুর সংখ্যা অপুষ্টিজনিত শিশুদের চেয়ে বেশি হবে৷

যুক্তরাজ্যের কয়েকজন বিজ্ঞানী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে ২ হাজার ৪০০টি গবেষণার তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে৷ সেখানে ৫ থেকে ১৯ বছরের ৩ কোটি ২০ লাখ শিশুর ওজন ও উচ্চতা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ ১৯৭৫ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে একটি ‘বডি মাস ইনডেক্স বিএমআই' বা সূচি তৈরি করা হয়েছে৷

এতে দেখা যাচ্ছে, উন্নত দেশগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের স্থূলতার হার অনেক বেশি৷ গত কয়েক বছরে শিশুদের স্থূলতার হার যুক্তরাজ্যে ১০ ভাগ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২০ ভাগ বেড়েছে৷

অন্যদিকে, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান তাদের মধ্যে অন্যতম৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ২০ ভাগ মেয়ে এবং ২৮ ভাগ ছেলে শিশু ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে৷ এর ফলে তাদের দেহে খুব দ্রুত রোগ সংক্রমণ ঘটছে৷

গত চার দশকে সারা বিশ্বের শিশু–কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার হার বেড়েছে ১০ গুণ৷ বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সাড়ে ১২ কোটি শিশু-কিশোরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি৷

বিশ্বের ২০০টি দেশের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়৷ এই স্থূল শিশু কিশোরেরা বড় হয়েও স্থূলই থেকে যাচ্ছে৷ স্থূল হওয়ার কারণে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তারা৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘এন্ডিং চাইল্ডহুড ওবিসিটি কমিশন'ও শিশু-কিশোরদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে৷ এছাড়া প্রতিদিন ৬০ মিনিট ব্যায়াম করা এবং স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা বন্ধ করা বা নড়াচড়া কম করা অভ্যেস ছাড়ার পরামর্শও দিয়েছে তারা৷ এটিকে ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট' হিসেবে উল্লেখ করে ডাব্লিউএইচও অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷

ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওবিসিটি ফোরামের চেয়ারম্যান ট্যাম ফ্রাই বলেছেন, ‘‘শিশুদের স্থূলতা রোধে এখনই কিছু করা না গেলে এই সমস্যা আরও প্রকট হবে এবং পরবর্তীতে তাদের ডায়াবেটিস দেখা দেবে৷''

শিশুদের স্থূলতা প্রতিরোধে ইইউ-র নতুন প্রচারাভিযান

স্থূলতায় ভুগছে ইউরোপের একটি প্রজন্ম৷ এই রোগ প্রতিরোধে ই ইউ শুরু করেছে প্রচারাভিযান৷ একটি বাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে সাতটি দেশে৷ বাসের নাম টেস্টি বাঞ্চ৷

স্থূলতার সঙ্গে আয়ু কমে যাওয়ার সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

মোটা হলে নানান অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে, এ তথ্য নতুন নয়৷ কিন্তু সম্প্রতি গবেষকদের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মোটা হলে মানুষের আয়ুও কমে যায়৷

   

অ্যামেরিকানদের মধ্যে এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন গবেষকরা৷ অ্যামেরিকান জার্নাল অফ প্রিভেনটিভ মেডিসিনে প্রকাশিত সমীক্ষাটিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণ বয়স্ক স্থূল মানুষের হার গত ১৬ বছরে শতকরা ৯০ ভাগ বেড়ে গেছে৷ ১৯৯৩ সালে এই বৃদ্ধির হার ছিল শতকরা ১৪ ভাগ৷ আর দুই বছর আগে ছিল শতকরা ২৭ ভাগ৷

সমীক্ষাটিতে আরও বলা হয়েছে, গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন যে, ১৯৯৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোটামুটি সব জনগোষ্ঠীরই অনেক পুরুষ ও নারী মোটা হওয়ার কারণে অল্প বয়সেই মারা গেছেন অথবা অসুস্থতায় ভুগেছেন৷ বলা হয়েছে, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েদের অতিরিক্ত মোটা হবার সম্ভাবনা বেশি৷ এই স্থূলতা তাদের জীবনের অনেক সুন্দর সময় কেড়ে নিয়েছে৷

মোটা কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েদের হার ১৯৯৩ সালে ছিল ২৫ শতাংশ৷ ২০০৮-এ তা শতকরা ১৬ ভাগ বেড়ে হয় ৪১ শতাংশ৷

স্থূলতা বৃদ্ধির দিক থেকে এরপরেই ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষেরা৷ তবে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের তুলনায় তা বেশ কম৷ এরপর ছিলেন হিসপ্যানিক অর্থাৎ স্প্যানিশভাষী বংশোদ্ভূত নারী ও পুরুষরা৷ সবশেষ স্থানে শ্বেতাঙ্গরা৷

সমীক্ষাটির লেখক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাওমিয়াও জিয়া ও নিউইয়র্ক শহরের সিটি কলেজের কমিউনিটি হেল্থ ও সোস্যাল মেডিসিন বিভাগের এরিকা লুবেটকিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও কম পরিশ্রম করা - শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের মৃত্যুর একটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷

এই সমীক্ষার জন্য ১৯৯৩ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে প্রায় ৩৬ লাখ মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করেন গবেষকরা৷ অ্যামেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি এবং জাতীয় স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান কেন্দ্রের তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই স্থূলতার কারণে অপেক্ষাকৃত অল্প বয়সে মৃত্যুর হার ঠিক করা হয়৷

Comments

Popular posts from this blog

Pineal region pilocytic astrocytoma; an unusual tumor: A cases report

  Dr. Ashis Kumar Ghosh Cancer/Oncology specialist Assistant Professor Department of Pediatric Hematology and Oncology National Institute of Cancer Research and Hospital Expertise:  Pediatric Hematology, Pediatric Oncology, Rare Childhood Cancer and Pediatric Medicine Tel- 01712685509 Pineal region tumors account for <1% of all intracranial neoplasms, of which approximately 14–27% is of pineal parenchymal origin.[ 1 ] Gliomas are very rare in the pineal region. They are thought to arise from the native glial cells of pineal gland or from the adjacent structure.[ 2 ] A wide spectrum of pineal region glial tumors have been described including pilocytic astrocytoma (PA), pleomorphic xanthoastrocytoma, glioblastoma, oligodendroglioma, and ganglioglioma; mainly as case reports. We report one cases of pineal region PA with variable clinical, radiological, and histological features with a review of literature. Case 1: An 8-year-old male child was brought to the Pediatric Hematology and Onc

বিয়ের আগে বরকনের রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে রিট

বিয়ের আগে বর ও কনের রক্তে থ্যালাসেমিয়া বা মাদকের অস্তিত্ব আছে কিনা তা পরীক্ষা করে মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট সৈয়দা শাহীন আরা লাইলীর পক্ষে রিটটি করেন আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে। আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সংবিধানের ২১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নাগরিকের জীবন রক্ষায় রাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আর সে জন্য আদালতের কাছে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়। রিটে বলা হয়েছে, থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হলে তাদের অনাগত সন্তান বিকলাঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ তরুণ। বিবাহবিচ্ছেদের অন্যতম কারণ এই মাদকাসক্তি। বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনের সালিশি পরিষদের তথ্যানুযায়ী নারীদের অভিযোগের কারণ হচ্ছে পুরুষত্বহীনতা। হেরোইন, ইয়াবা, অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন মাদক সেবনে পু

শিশু মাতৃদুগ্ধ পানে পিছিয়ে এশিয়ার শিশুরা।

মাতৃদুগ্ধ পানে এশিয়ার শিশুরা পিছিয়ে। ডাঃ আশীষ কুমার ঘোষ শিশু রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ সন্তান জন্ম দেয়ার পরবর্তী একঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় নবজাতককে বুকের দুধ পান করাতে না পারলে নবজাতকের জন্য তা প্রাণহানীর কারণ হতে পারে। জানা গেছে, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশের পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন শিশুই (আনুমানিক ৭ কোটি ৮০ লাখ শিশু) জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায় না। তবে দক্ষিণ ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে ঠিক সময়ে স্তন্যপানের রীতি অধিক প্রচলিত। সে দিক থেকে অনেক পিছিয়ে এশিয়ার দেশগুলো। মাত্র ৩২ শতাংশ (অর্থাৎ প্রতি তিনজনে দুইজন বঞ্চিত) শিশু জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায়। যার জেরে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এমনকি, তৈরি হয় প্রাণ সংশয়ও। স্তন্যপান নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই প্রতিবেদন যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শিশুর জন্মের পরের এক ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃদুগ্ধই হল প্রথম টিকা। সেটা দেরিতে পেলে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কয়েক গুণ ব